Thursday, August 1, 2013

যে কয়েকজন ব্যাক্তি বদলে দিয়েছেন ইন্টারনেটের জগৎ

ইন্টারনেট ছাড়া একটি দিন কল্পনা করতে পারেন? আপনারা পারেন কিনা জানি না, তবে আমার পক্ষে অসম্ভব। কারন আমার মত ইন্টারনেট এডিক্টদের প্রাত্যহিক জীবনের একটি অংশ এটি যাকে ছাড়া একটি দিন কল্পনা করা যায় না। তবে আজকের এই ইন্টারনেট কিন্তু ঠিক এরকম ছিল না। এই ইন্টারনের সৃস্টি এবং এর উন্নয়নে ভূমিকা রাখা নিবেদিত প্রান কিছু মানুষের কল্যানে ইন্টারনেট আজ পৌছেছে এই পর্যায়ে। যুগ যুগ ধরে যারা ইন্টারনেটকে বদলে দিয়েছে, চলুন তাদের সম্পর্কে কিছু জানা যাক…
Vint Cerf and Bob Kahn
এরাই হচ্ছেন ইন্টারনেট এর জনক। Vint Cerf এবং Bob Kahn দু’জন মিলে তৈরি করেন TCP/IP এর মত কমিউনিকেশন প্রটোকলগুলো। এই প্রটোকলগুলোর মাধ্যমেই নেটওয়ার্কের আওতায় থাকা কম্পিউটারগুলো একটি আরেকটির সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
Tim Berners-Lee
একে মোটামুটি আমরা সবাই চিনি। www তথা World Wide Web এর সৃস্টা হচ্ছে টিম বানার্স লী। World Wide Web Consortium এর পরিচালক হয়ে এখনো তিনি ইন্টারনেটের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
Ray Tomlinson
খুব একটা পরিচিত কেউ না হলেও, ইনিই হচ্ছেন ই-মেইলের উদ্ভাবক। তিনিই প্রথম একটি মেশিন থেকে আরেকটি মেশিনে বার্তা প্রেরনের কৌশল হিসেবে ই-মেইল আবিস্কার করেন। আর বর্তমানে ই-মেইল হচ্ছে ইন্টারনেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম।
Michael Hart
বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে কাগজের বইয়ের চাইতে ইবুক বেশি সহজলভ্য এবং জনপ্রিয়। Michael Hart ই প্রথম ইবুক এর জন্ম দেন। আর এরপর থেকে বইয়ের দুস্প্রাপ্যতার কারনে জ্ঞান অর্জনের বাধা দূর হয়ে গেছে।
Scott Fahlman
আসকি ভিত্তিক প্রথম স্মাইলি ইমোটিকন তৈরির কৃতিত্ব Scott Fahlman এর। বার্তার মাঝে কিছুটা ভিন্নতা আনা এবং হিউমর এর সংযোজন ঘটানোর জন্যই তিনি প্রথম ইমোটিকন এর ব্যবহার করেন। আর আজ লাখ লাখ ব্যবহারকারী ম্যাসেঞ্জারে ইমোটিকন ব্যবহার করছেন।
Marc Andreessen
নেটস্কেপ নেভিগেটর এর কথা মনে আছে? ইন্টারনেটে প্রথম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এই ব্রাউজার এর নাম প্রথমে ছিল ‘মোসাইক’। তারপর নেটস্কেপ নেভিগেটর নামে বিণিজ্যিকিকরন করা হয়। নেটস্কেপ নেভিগেটর ছাড়াও Marc Andreessen ডিগ এবং টুইটার এর মত স্টার্টআপ এ জড়িত ছিলেন।
Larry Page and Sergey Brin
ল্যারি পেইজ এবং সার্জেই ব্রিন মোটামুটি সবারই পরিচিত। সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল এর এই দুই প্রতিষ্ঠাতা ইন্টারনেট সার্চিং এর ধারনাই বদলে দিয়েছেন। ১৯৯৮ সালে শুরু করার পর থেকে তাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে গুগল ইন্টারনেট দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিধর কোম্পানী।
David Filo and Jerry Yang
গুগলের আগে ইন্টারনেট দুনিয়ায় রাজত্ব করা ‘ইয়াহু’ এর দুই সৃস্টা হচ্ছেন David Filo and Jerry Yang। ইয়াহু বর্তমানে আগের মত জনপ্রিয় না হলেও, এখনো ইন্টারনেটে নিজেদের শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগের বিপ্লব ঘটিয়েছে প্রথম এই ইয়াহু।
Jimmy Wales
জিমি ওয়েলস ২০০১ সালে উইকিপিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় উন্মুক্ত বিশ্বকোষ যাতে এমন কোন বিষয় নেই যা স্থান পায়নি। ইন্টারনেটে যে কোন কাজে তথ্যসূত্র হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় উইকিপিডিয়ার প্রবন্ধগুলো।
Bram Cohen
ফাইল শেয়ারিং এর জগতে সবচেয়ে পরিচিত নাম বিটটরেন্ট এর সৃস্টা Bram Cohen। বিটটরেন্ট এর মূল কার্যপ্রক্রিয়াটি বেশ মজার। আপনি যত বেশি আপলোড করবেন, তব বেশি ডাউনলোডের সুযোগ পাবেন। টরেন্ট ডাউনলোড প্রক্রিয়া একটি ফাইলকে অনেকগুলো ছোট ছোট খন্ডে ভাগ করা হয়। যখনই আপনি একটি খন্ড ডাউনলোড করবেন, সাথে সাথেই সেটি অন্যজনের কাছে আপলোড হতে থাকবে। অর্থাৎ একটি ফাইলই কয়েকজন ব্যবহারকারীর মাঝে ঘুরে ফিরে আপলোড এবং ডাউনলোড হতে থাকে।
Matt Mullenweg
সবচেয়ে জনপ্রিয় বহুল ব্যবহৃত ব্লগ সিএমএস ওয়ার্ডপ্রেস এর উদ্ভাবক হচ্ছেন Matt Mullenweg। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগগুলোর বেশিভাগই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা। আমাদের সকলের প্রিয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডট কম ব্লগও ওয়ার্ডপ্রেস ইঞ্জিন ব্যবহার করেই তৈরি করা হয়েছে।
Julian Assange
জুলিয়ান এসাঞ্জ তৈরি করেন উইকিলিকস নামক একটি ওয়েবসাইট যেখানে পুরো বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাপ্ত গোপন তথ্য প্রকাশ করা হয়। তিনি একটি বিশেষ সফটওয়্যার ডেভেলপ করেন যেটি গোপন বার্তা প্রকাশকারীর সকল তথ্য পুরোপুরি মুছে ফেলে সেই বার্তাটি বিশ্ববাসীর কাছে প্রকাশের পূর্বে। ফলে কে বা কারা কখন এটি প্রকাশ করেছে, তা সম্পূর্ন গোপন থেকে যায়।
Mark Zuckerberg
ফেইসবুক সম্পর্কে নতুন করে বলা কিছু নেই। আর এই ফেইসবুকের সৃস্টিকর্তা হচ্ছেন মার্ক জুকারবার্গ। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৫০০ মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারী নিয়ে ফেইসবুক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া এবং এককভাবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট।
এরা ছাড়াও আরও অনেকেই রয়েছেন যারা বিভিন্নভাবে অবদান রেখে ইন্টারনেটকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। সবার প্রতি থাকলো আমাদের কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধাবোধ যাদের কারনে আজ ইন্টারনেট আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এরকম আরও কিছু পোস্টঃ

No comments:

Post a Comment